রোজার সংজ্ঞা
---------------
রোজা ফারসি শব্দ, যার অর্থ উপবাস। আরবিতে রোজাকে সাওম বলে। সাওমের বাংলা অর্থ বিরত থাকা, দূরে থাকা, কঠোর সাধনা, অবিরাম প্রচেষ্টা, অত্ম সংযম ইত্যাদি। ইসলামী শরীয়তে, আল্লাহর নির্দেশ পালনের উদ্দেশ্যে নিয়তসহ সুবেহ সাদেক হতে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহার ও স্ত্রী সহবাস থেকে বিরত থাকাকে সাওম বা রোজা বলা হয়।
রোজা ফরজ হওয়ার শর্ত
——————-
১। মুসলমান হওয়া।
২। প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়া।
৩। সুস্থ মস্তিষ্ক স¤পন্ন হওয়া।
রোজার নিয়ত
————
মনে মনে রোজা রাখার সঙ্কল্পকে রোজার নিয়ত বলে।
রমজানের প্রত্যেকটি রোজার জন্য নিয়ত করা ফরজ। রোজা রাখার মানসে সাহরী খেলে তাই নিয়াত বলে গণ্য হবে। (আলমগীরী)
যদি কেহ মুখে বলে যে, আমি ইন্শ-আল্লাহ আগামী দিন রোজা রাখব, এতে রোজা শুদ্ধ হবে। (আলমগীরী)
কেহ নফল রোজা রাখলে নিয়ত করার সময় ‘নফল রোজার’ কথা উল্লেখ করতে হবে।
নিম্নে রোজার নিয়ত প্রদত্ত হলোঃ নাওয়াইতু আন আছুম্মা গাদাম্মনি শাহরি রমাদানাল মুবারকি ফারদাল্লাকা ইয়া আল্লাহু ফাতাকাব্বাল মন্নিী ইন্নাকা আনতাস সাময়িুল আলমি। “হে আল্লাহ, আমি আগামীকাল রমজান মাসের ফরজ রোজা রাখার নিয়ত করছি। তুমি আমার রোজা কবুল কর। নিশ্চয়ই তুমি সর্বশ্রোতা ও মহাজ্ঞানী”।
রোজার তাৎপর্য
————
দ্বিতীয় হিজরীতে শাবান মাসে মদীনায় রোজা ফরজ হয়েছে। তখন থেকে আশুরার রোজা নফল হয়। আল্লাহর নবী (সাঃ) ওই সালের রমজান থেকে মোট ৯ বার রমজানের রোজা পালন করেন। রোজা ইসলামের ৫ম স্তম্ভ এবং সর্বাপেক্ষা তাৎপর্যপূর্ণ ইবাদত। এর অস্বীকার^কারী কাফের এবং বিনাকারনে পরিত্যাগ করলে কবীরা গুনাহ হয়।
মানব দেহ জড় উপাদানে সৃষ্ট। এর চাহিদাও বিচিত্র। সেকারণে পাওয়া এবং ভোগ করার নেশা সর্বক্ষণ মানুষের সূক্ষ আত্মিক অনুভূগিুলোকে বিপর্যস্ত করে রাখে এবং আত্মাকে অনুভূতিহীন করে দেয়। ফলে উন্নততর মানবিক গুনগুলো দুর্বল, এমনকি প্রাণহীন হয়ে পড়ে। মনুষ্যত্বের এ স্বভাবজাত পতন প্রতিহত করে বিবেক এবং হ্নদয়-প্রবৃত্তির প্রাধান্য প্রতিষ্ঠা করার উদ্দেশ্যেই বছরে এক মাস সিয়াম সাধনা অপরিহার্য করা হয়েছে। সিয়ামের সর্বপ্রথম শিক্ষা ভোগ-স্পৃহা নিয়ন্ত্রণ করে দেহমনকে ত্যাগের মন্ত্রে উদ্বুদ্ব করে তোলা। একই সঙ্গে শরীর এবং মনকেও আল্লাহ তায়ালার নাফরমানি থেকে সচেতনভাবে দূরে রাখা। রোজা মানুষকে আল্লাহভীরু, অনুগত বান্দা ও সংযমী করে তোলে।
রমজান মাস ইবাদতের বসন্তকাল।বছরব্যাপী পাপাচারের তীব্র খরায় যাদের আত্মা ফেটে চৌচির হয়েছে, এ মাসে তারা ফিরে পায় সজীবতা।মাওলার খাজ রহমতে সবুজ-শ্যামল হয়ে ওঠে রুহ-কাননের প্রতিটি বৃক্ষ ও লতা-পাতা।সালাত, ইস্তগফার, তাসবিহ-তাহলিল, দান-খয়রাতসহ কত রকমের ফুলের খুসবু গ্রহণে ব্যাকুল হয়ে ওঠে এ মাসে বান্দার প্রাণ। মাবুদ এ মাসে বিভিন্ন ধরনের উপহার আর উপঢৌকনে ভরিয়ে দেন বান্দার দুই হাত।
রোজার শিক্ষা
———-
১। রহমত, মাগফিরাত ও নাজাত ঃ পবিত্র মাহে রমজানে বান্দা তার মহান রব আল্লাহর পক্ষ থেকে লাভ করে অফুরন্ত রহমত,
মাগফিরাত ও কৃত অপরাধে ক্ষমা এবং নাজাত।
২। কুরআন নাজিত ঃ এ মাসেই মানব জীবনের পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান আল-কুরআন নাজিল হয়েছিল। তাই রোজা বাস্তব জীবনে
কুরআনের বিধান অনুসরনের প্রেরণা দেয়।
৩। ভ্রাতৃত্ব ও সৌহার্দ্য ঃ রমজান মাসে প্রত্যেক রোজাদার আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য একে অপরের প্রতি সৌহার্দ্য-সহানুভূতি প্রকাশ
করেন এবং দান-সাদকা ও মেহমানদারির মাধ্যমে পরস্পরের সাথে ভ্রাতৃত্ব-ভালোবাসা গড়ে তোলেন। রাসূল (সাঃ)
বললেন, “রমজান পারস্পারিক সহানুভূতি প্রকাশের মাস”। (বায়হাকী)
৪। অপরের কষ্ট উপলব্ধি ঃ ধনী ব্যক্তিরা সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পানাহার থেকে বিরত থাকার ফলে গরীবের দুঃখ-কষ্ট
উপলব্ধি করতে পারে। তারা গরীবের প্রতি সহমর্মিতার হাত প্রসারিত করে। তারা গরীবকে যাকাত, ফিতরা ও দান-খয়রাত
করে থাকেন।
৫। শপথ ঃ কল্যাণের এ মাসে মুমিন ব্যক্তি তার বিগত দিনের ভুল-ত্র“টির জন্য তাওবা করেন এবং আগামী দিনে আল্লাহর
সন্তুষ্টির পথে চলার ও অন্যকে চালাবার প্রচেষ্টার শপথ গ্রহণ করেন।
৬। আত্মগঠন অনুশীলন ঃ রোজা এক অনন্য ইবাদত, যা মানুষের মধ্যে সম্পর্ক বৃদ্ধি করে, আত্মসংযমে উদ্বুদ্ব করে, সকল
লোভ-লালসা ও স্বার্থপরতার মূলে আঘাত হানে। রোজা ইচ্ছাশক্তি বৃদ্ধি করে, সকল অলসতা, আরাম-আয়েশের জড়তা
থেকে মুক্তি দেয়। রোজা ঈমানদার ব্যক্তির মধ্যে ন্যায়ের পক্ষে ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে কাজ করার আত্মচেতনা
সৃষ্টি করে এবং আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠার কাজে নিজেকে নিয়োজিত করার প্রেরণা জোগায়।
৭। শ্রেষ্ঠ রাত ঃ পবিত্র রমজান বরকতপূর্ণ মাস। এ মাসে এমন একটি রাত রয়েছে যা হাজার মাস অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ। আর সে রাত
হলো শবে কদরের রাত।
৮। অধিক সওয়াব ঃ এই মাসে যে ব্যক্তি একটি নফল আমল করবে, সে অন্য মাসের একটি ফরজ আদায়ের সওয়াব পাবে।
আর যে ব্যক্তি এই মাসে একটি ফরজ আদায় করবে, সে অন্য মাসের ৭০ টি ফরজ আদায়ের সওয়াব পাবে।
৯। তাকওয়া অর্জন ঃ মাহে রমজানের অন্যতম শিক্ষা হচ্ছে তাকওয়া অর্জন। সাওম (রোজা) পালনের মাধ্যমে মনের মধ্যে
খোদাভীতি বা আল্লাহর ভয় সৃষ্টি হয়। ইসলামের পরিভাষায় আল্লাহর প্রতি শ্রদ্ধামিশ্রিত ভয় এবং রাসূল (সাঃ)-এর সুন্নাহ অনুসারে কোন গর্হিত ও নিষিদ্ধ কাজ থেকে বিরত থাকার জন্য মনের স্বতঃস্ফূর্ত প্রবল ইচ্ছাকে তাকওয়া বলা হয়। যার মধ্যে খোদাভীতি বা তাকওয়া আছে তাকে বলা হয় মুত্তাকী। আর মুত্তাকীর স্থান হচ্ছে জান্নাত। মাহে রমজানের মূল উদ্দেশ্যই হচ্ছে তাকওয়া অর্জন করা।
১০। ইবাদতের সুযোগ তৈরি করে ঃ রোজা সাধনার মাস, ইবাদতের মাস। এ মাসে প্রত্যেক মুসলমান অধিক ফজিলত লাভ
করতে চায়। এ সময় রোজাদার বেশি বেশি দৈহিক ও আর্থিক আমল করার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করে। এ সময় সাওয়াবের
নিয়তে রোজাদার বেশি বেশি দান করে। বছরের অন্য সময় যারা ফরজ, নফল ও সুন্নাতের আমল চর্চা করে না, রোজার
সময় সবাই ফরজ তো আদায় করেই এমনকি সুন্নাত ও নফলের দিকেও নজর দেয়। এ সময় রোজাদার সকল প্রকার
মিথ্যা, ধোঁকা, প্রতারণার আশ্রয় থেকে বেরিয়ে এসে পরিশীলিত জীবন-যাপনের প্রয়াস চালায়। রোজাদার চাকরিজীবী ঘুষ-
দুর্নীতি থেকে দূরে থাকে। রোজাদার ব্যবসায়ী ওজনে কম দেয়া ও মিথ্যা শপথ করে মালামাল বিক্রি করা ও গ্রাহককে ফাঁকি
দেয়া থেকে মুক্ত থাকার চেষ্টা করে। রোজার সময় সাধারণ মানুষও আজেবাজে কথা ও কাজ এবং অশোভন আচরণ থেকে
বিরত থাকে। রোজার কারণেই মানুষের মধ্যে সার্বিকভাবে ইবাদতের এই অনুভূতি ও কর্মকান্ড চালু হয়।
১১। ধৈর্য, সংযম ও ত্যাগের শিক্ষা ঃ প্রতি বছর রোজা আসে প্রশিক্ষণের বার্তা নিয়ে। এ সময় রোজাদারের মধ্যে ধৈর্য, সহনশীলতা ও ত্যাগের মনোভাব লক্ষ্য করা যায়। মহানবী (সাঃ) বলেছেন, “রমজান সবরের (ধৈর্যের) মাস, আর সবরের পুরস্কার হলো জান্নাত” (বায়হাকী)। রোজাদারকে সারাদিন উপোস থাকা, খাবার ও পানীয় মজুদ থাকা সত্ত্বেও নির্ধারিত সময়ের আগে তা গ্রহণ না করা, আরামের ঘুম থেকে জেগে উঠে দীর্ঘ এক মাস মধ্যরাতে সেহেরি খাওয়া, ইফতারের পর ক্লান্ত-শ্রান্ত শরীর নিয়ে এশার নামাজ ও ২০ রাকাত তারাবিহ নামাজ আদায় করা, ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও কারো সাথে ঝগড়া-ফ্যাসাদে জড়িয়ে না পড়া এবং অন্যায়, মিথ্যা ও ভোগের সামগ্রীকে রোজা রেখে পরিহার করার জন্য সত্যিকারার্থে চরম ধৈর্য ও সংযমের পরাকাষ্ঠা দেখাতে হয় রোজাদারকে। এভাবে একমাস রোজাদারের মধ্যে ধৈর্য, ত্যাগ ও সংযমের মনোভাব তৈরি হয়।
১২। আদব ও শিষ্টাচার শিক্ষা দেয় ঃ রোজার মাস সুন্দর হয়ে চলার মাস। এ মাস শালীনতা ও শিষ্টাচারের পরাকাষ্ঠা প্রদর্শনের মাস। রোজার কারণে অন্যায়-অশ্লীলতা, মিথ্যা, প্রতারণা ইত্যাদি খারাপ কাজগুলো থেকে একজন রোজাদার যখন নিজেকে বিরত রাখে, তখন তার মধ্যে শিষ্টাচার, নম্রতা, আদব ও উন্নত চরিত্রের এক মহীয়ান সৌন্দর্য সৃষ্টি হয়। এভাবেই একজন রোজাদার রমজানে সিয়াম সাধনার মাধ্যমে আদর্শ মানুষে পরিণত হয়।
১৩। নিয়মানুবর্তিতা শেখায় ঃ রোজাদারকে একটি নির্দিষ্ট দিনে অর্থাৎ চাঁদ দেখার দিন থেকে রোজা রাখা শুরু করতে হয়। নির্দিষ্ট সময়ে রাতে উঠে সাহরি খেতে হয়, সময়মতো ইফতারি করে রোজা ভাঙতে হয়, নিয়ম ও সময়ের মধ্যে পাঁচ ওয়াক্ত নামজ, তারাবি নামাজ পড়তে হয়। এভাবে দীর্ঘ একমাস রোজার বিধানগুলো পালনের মধ্য দিয়ে রোজাদারের জীবনে নিয়মানুবর্তিতার গুন তৈরি হয়। একজন আদর্শ ও সফলকাম মানুষের জন্য এ গুন অপরিহার্য।
১৪। ঐক্য ও সংহতি সৃষ্টি করে ঃ রমজান মাস মুসলিম উম্মাহর জতীয় উৎসবের মাস। সারা দুনিয়ার মুসলমানরা রোজার মাসে ঐক্য ও সংহতির এক অনন্য ঐতিহ্য প্রকাশ করে। দুনিয়ার সব মুসলমান রমজানের চাঁদ দেখার সাথে সাথে রোজা আরম্ভ করে এবং শাওয়ালের চাঁদ দেখে রোজার সমাপ্তি টানে। আবার সূর্যোদয়ের আগেই সেহরি খাওয়া শেষ করে এবং সূর্য অস্ত যাওয়ার সাথে সাথে ইফতার করে। কোথাও এ নিয়মের কোন হেরফের হয় না। আল্লাহর নির্দেশে সব মুসলমান একই নিয়মে এবং সময়ে তারাবিহ নামাজ আদায় করে এবং ঈদুল ফিতরের ফিতরা প্রদান করে। তারপর সবাই ঈদগায়ে গিয়ে নামাজ আদায় করে, কালাকুলি করে ঈদের আনন্দ-উৎসবে মেতে ওঠে। এভাবে মুসলমানদের মধ্যে ঐক্য ও সংহতির এক ঐতিহাসিক সম্পর্ক তৈরি হয়।
১৫। জিহ্বাকে সংযত করা ঃ জিহ্বা হচ্ছে কথা বলার বাহন। তাই জিহ্বাকে সংযত করা প্রয়োজন। রোজা জিহ্বাকে সংযত করে থাকে। রাসূল (সাঃ) বলেন, কেবল খাদ্য ও পানীয় থেকে বিরত থাকার নামই রোজা নয় বরং রোজা হচ্ছে বেহুদা
কথা ও গুনাহর কাজ থেকে বিরত থাকা (ইবনে হিব্বান)। কেউ যদি (রোজা রেখেও) মিথ্যা কথা বলা ও খাপাপ কাজ পরিত্যাগ না করে, তবে তার শুধু পানাহার ত্যাগ করা (অর্থাৎ উপবাস ও তৃষ্ঞার্ত থাকা) আল্লাহর কোন প্রয়োজন নেই। (বুখারী)
কুরআনের আলোকে রোজা
——————–
১। “হে ঈমানদারগণ! তোমাদের উপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেভাবে তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের উপর ফরজ করা
হয়েছিল, যেন তোমরা তাকওয়া (পরহেজগারী) অর্জন করতে পার”।
সূরা আল-বাকারাহ : ১৮৩
২। ‘‘আর সিয়াম (রোজা) পালন করাই তোমাদের জন্য অধিকতর কল্যাণপ্রসূ, যদি তোমরা জানতে”।
সূরা আল-বাকারাহ : ১৮৪
৩। রোজার মাস (এমন একটি মাস) যাতে কুরআন নাযিল করা হয়েছে, আর এ কুরআন হচ্ছে মানব জাতির জন্য পথের দিশা,
সৎপথের সুস্পষ্ট নিদর্শন, সত্য ও মিথ্যার পার্থক্যকারী। অতএব, তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি এ মাসটি পাবে, সে এতে
রোজা রা^খবে। (সূরা আল-বাকারাহ : ১৮৫)
৪। (এই রোজা) নির্দিষ্ট কয়েক দিনের জন্যে। অতঃপর তোমাদের মধ্যে যে অসুস্থ থাকবে, অথবা সফরে থাকবে, তবে (সেই
সময় রোজা না রেখে) অন্য সময় এই সংখ্যক পূরণ করে নিবে। আর এটি যাদের জন্যে অত্যন্ত কষ্টদায়ক হয়, তারা এর
পরিবর্তে একজন মিস্কিনকে খাদ্য দান করবে। যে ব্যক্তি খুশির সাথে সৎকাজ করে, তা তার জন্যে কল্যাণকর হয়। আর
যদি (কষ্ট সত্ত্বেও) রোজা রাখ, তবে তা তোমাদের জন্যে বিশেষ কল্যাণকর, যদি তোমরা তা বুঝতে পার। (সূরা বাকারা :
১৮৪)
৫। রোজার রাতে তোমাদের স্ত্রীদের সাথে সহবাস করা তোমাদের জন্যে বৈধ করা হয়েছে। ............ আর রাতের বেলায় পানাহার কর, যতক্ষণ পর্যন্ত তোমাদের নিকট রাতের কালো রেখা থেকে সকালের সাদা রেখা স্পষ্ট হয়ে না ওঠে। (সূরা
বাকারা : ১৮৭)
হাদীসের আলোকে রোজা
——————-
১। রাসূল (সাঃ) বলেছেন, ইসলাম পাঁচটি ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত। সেগুলো হলো – ১ । কালেমা
তাইয়েবা (এ কথার সাক্ষ্য দেয়া যে, আল¬¬াহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই এবং মুহাম্মদ (সাঃ) তাঁর বান্দা ও
রাসূল) । ২ । নামাজ কায়েম করা ৩ । যাকাত আদায় করা ৪ । হজ পালন করা ৫ । রমজানের
রোজা রাখা । (বোখারী ও মুসলিম)।
২। রমজান এমন এক মাস যার প্রথম ভাগে আল্লাহর রহমত, মধ্যভাগে গুনাহর মাগফিরাত এবং শেষভাগে দোযখ হতে মুক্তি
লাভ। (বায়হাকী)
৩। জান্নাতের একটি দরজা আছে যাকে বলা হয় রাইয়ান। এ দরজা দিয়ে কিয়ামতের দিন একমাত্র রোজাদার ব্যক্তিরাই প্রবেশ
করবে। (বুখারী, মুসলিম)
৪। রোজা (গুনাহ থেকে আত্মরক্ষার জন্য) ঢাল স্বরূপ । সুতরাং রোজাদার অশ্লীল কথা বলবে না বা জাহেলী আচরন করবে না।
কোন লোক তার সাথে ঝগড়া করতে উদ্যত হলে অথবা গাল-মন্দ করলে সে তাকে বলবে, “আমি একজন রোজাদার”।
(বুখারী, মুসলিম)
৫। যখন রমজান মাস আসে জান্নাতের দরজাগুলো খুলে দেয়া হয় এবং দোযখের দরজাগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়, আর
শয়তানকে শৃঙ্খলিত করা হয়।